মাধ্যমিক অথবা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলে রাজ্য সরকার দেবে 10 হাজার করে টাকা। যারা যারা মাধ্যমিক অথবা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন অথবা স্নাতক পাঠরত রয়েছেন তারা সকলেই রাজ্য সরকারের এই স্কলারশিটে আবেদন করে ১০ হাজার টাকা পেয়ে যেতে পারেন। এই স্কলারশিপের টাকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ত্রাণ তহবিলের তরফ থেকে দেওয়া হবে। বিশেষ করে রাজ্যের দ্বারা আর্থিক দিক দিয়ে পিছিয়ে রয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে মূলত এই স্কলারশিপ চালু করেছে রাজ্য সরকার। তবে আপনি যদি উপযুক্ত হন তাহলে সকলেই এই স্কলারশিপে আবেদন জানাতে পারবেন। পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হলেই এখানে আবেদন জানানোর সুযোগ পেয়ে যাবেন। তারা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন অথবা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন এবং যারা পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন সেই সমস্ত পর্বতের মধ্যে এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বিশেষ হৈচৈ পড়ে গেছে। তবে সেইসঙ্গে এই স্কলারশিপের আওতায় কিভাবে আবেদন করতে হবে, তার জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে, কবে থেকে আবেদন শুরু হবে কবে শেষ হবে এই বিষয় গুলি নিয়ে রাজ্যের ছাত্র ছাত্রীদের মনে নানারকম প্রশ্ন জাগছে। আর সেই গুলির যথাযথ উত্তর দিতেই রইল আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন।
রাজ্য সরকারের তরফে এই স্কলারশিপ দেওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য হল মূলত দরিদ্র শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রী যাতে পড়াশোনা সঠিকভাবে চালিয়ে যেতে পারে সেই কারণেই রাজ্য সরকারের এই স্কলারশি চালু করেছেন। আমাদের রাজ্যে এখনও পর্যন্ত এমন অনেক দরিদ্র শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীরা রয়েছে যারা পরিবারের আর্থিক দুরাবস্থার কারনে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকের পর লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। মূলত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় আসার পর এই স্কলারশিপ চালু করেছেন এবং এখনো পর্যন্ত সকলের সঠিকভাবে এই স্কলারশিপের টাকা নিয়মিত পেয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার আরও বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ চালু করেছেন যেগুলি হল যেগুলির বিবেকানন্দ স্কলারশিপ, মেরিট কাম মিনস এবং মাইনোরিটি স্কলারশিপ। প্রতিবছর মাধ্যমিক অথবা উচ্চমধ্যমিক পরীক্ষা হওয়ার পরে ছাত্র-ছাত্রীরা এই সমস্ত স্কলারশিপের আবেদন করে নিয়মিত টাকা পেয়ে যান।
তবে রাজ্য সরকারের নতুন যে স্কলারশিপের সম্বন্ধে আলোচনা করা হচ্ছে এবং যার মাধ্যমে ১০ হাজার করে টাকা পেয়ে যাবেন সেই স্কলারশিপের নাম হল নবান্ন স্কলারশিপ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই চালু করেছেন এবং এখনো পর্যন্ত এই স্কলারশিপের টাকা সকলে সঠিকভাবে পেয়ে যাচ্ছে। এই স্কলারশিপ এর মাধ্যমে ভীষণভাবে উপকৃত হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা। তবে পশ্চিমবঙ্গে এখনো অনেক ছাত্রছাত্রী রয়েছে যারা এই স্কলারশিপ সম্বন্ধে জানে না । তাই এই সুবিধা লাভ করা থেকে বঞ্চিত হয়। যাদের এই স্কলারশিপ সম্বন্ধে কোন ধারণা নেই তাদের উদ্দেশ্যে মূলত আজকের এই প্রতিবেদনটি। নীচে এই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।
নবান্ন স্কলারশিপ স্কলারশিপে আবেদন করতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে?
এই স্কলারশিপের আওতায় নাম নথিভুক্ত করতে হলে আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীর নিম্নলিখিত যোগ্যতা গুলি থাকা আবশ্যিক। যেমন-
১) পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
২) মাধ্যমিক অথবা উচ্চমাধ্যমিকের 60% নম্বার পেতে হবে।
৩) বর্তমান যারা পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা এই স্কলারশিপ এ আবেদন জানাতে পারবেন।
৫) অন্য কোন স্কলারশিপ এ আবেদন করলে এই স্কলারশিপের টাকা পাবেন না।
৬) এক্ষেত্রে আবেদনকারী পড়ুয়াকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনস্থ যে কোনো স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে হবে তবেই সে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে নচেৎ নয়।
৭) আবেদনকারী পড়ুয়ার পরিবারের বার্ষিক আয় অবশ্যই ২.৫ লক্ষ টাকা বা তার নীচে হতে হবে।
নবান্ন স্কলারশিপের মাধ্যমে কত টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হয়?
নবান্ন স্কলারশিপের আওতায় থাকা প্রতিটি ছাত্র ছাত্রীকে বছরে ১০,০০০ টাকা করে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে স্কলারশিপ প্রদান করা হয়।
কিভাবে আবেদন করবেন?
এখানে অনলাইন অথবা অফলাইন দুটো পদ্ধতির মাধ্যমে আবেদন জানানো যায়।
১) প্রথমে এই স্কলারশিপ স্কিমের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট http://www.cmrf.wb.gov.in/ এ প্রবেশ করতে হবে। এরপর Apply for Educational Financial Assistance” বিভাগে যান।
২) এরপর নিজস্ব মোবাইল নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।
৩) তারপর সেখানে নির্দিষ্ট স্থান অনুযায়ী প্রয়োজন মতো তথ্য দিয়ে ফর্মটিকে ফিলাপ করে ফেলতে হবে।
৪) তারপর যাবতীয় প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার ডকুমেন্টস সহ অন্যান্য সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস স্ক্যান করে আপলোড দিতে হবে।
৫) সবশেষে আবেদনপত্র জমা দিয়ে রেফারেন্স নাম্বার সংগ্রহ করে রাখতে হবে।
আবেদন করার সময় কি কি ডকুমেন্টস সহ আবেদন পত্র জমা দিতে হবে?
অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন পত্র জমা দেওয়ার সময় তার সঙ্গে যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহ জমা দিতে হবে সেগুলি হল-
১) বয়সের প্রমানপত্র হিসেবে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড বা বার্থ সার্টিফিকেট এর এক কপি জেরক্স।
২) ফটো আইডি প্রুফ হিসেবে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড এর এক কপি জেরক্স।
৩) আবেদনকারী বর্তমানে যে স্তরে লেখাপড়া করছেন তার আগের স্তরের ফাইনাল পরীক্ষার মার্কসীট ও সার্টিফিকেটের এক কপি করে জেরক্স।
৪) বর্তমানে আবেদনকারী যে স্তরে লেখাপড়া করছেন তার ভর্তির রসিদের এক কপি জেরক্স
৫) MIA অথবা MP রেকমেন্ডেশন লেটার এর এক কপি জেরক্স ।
৬) সেলফ ডিক্লিয়ারেশন সার্টিফিকেট এর প্রিন্ট করা কপি।
৭) পরিবারের বার্ষিক আয়ের প্রমান পত্র অর্থাৎ ইনকাম সার্টিফিকেট এর অরিজিনাল কপি।
৮) ব্যাঙ্কের পাস বুকের প্রথম পাতার জেরক্স।
৯) দুই কপি রিসেন্ট তোলা রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।
১০) Rank সার্টিফিকেটের এর এক কপি জেরক্স।
কত দিনের মধ্যে আবেদন পত্র জমা দিতে হবে?
এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন করার জন্য কোনো রকম শেষ সময় সীমা ধার্য্য করা হয়নি। প্রতি বছর মাধ্যমিক/ উচ্চমাধ্যমিক/স্নাতক ডিগ্রি পাস করার পর যে কোনো পড়ুয়া এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আবেদন পত্র পাঠানোর ঠিকানা কি?
অফলাইনে আবেদনপত্র জমা করতে চাইলে নিচের ঠিকানায় জমা করতে হবে।
Department of CMRF Scholarships,
Chief Ministers Office, ‘Nabanna’,
14th Floor, 325 Sarat Chatterjee Road,
Howrah-711102.